নিউজ ডেস্ক লালসবুজের কণ্ঠ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় কাফনের কাপড় পরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি কর্তৃক নামঞ্জুর, দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্তের তালিকায় নাম ও হয়রানির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকালে উপজেলার টুপুরিয়া গ্রামে নির্মিত হেমায়েত বাহিনী স্মৃতি যাদুঘরের সামনে তারা এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা সামচুল হক, সিরাজুল ইসলাম, মোমেনা বেগম, রমজান আলী, আব্দুল আজিজ, শেখ আব্দুল মান্নান, আবুল কালাম আজাদ দাড়িয়া প্রমুখ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল কালাম আজাদ দাঁড়িয়া বলেন, যাচাই বাছাইয়ের নামে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করা হয়েছে। যাচাই বাছাইয়ের তালিকায় নাম থাকা ৩৩৬ জন মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই কমিটি মুক্তিযোদ্ধা প্রতি দেড় থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন। পুনরায় সঠিকভাবে যাচাই বাছাইয়ের দাবি করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। এই যাচাই বাছাই বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি কমিটির ৪ সদস্যকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছি। ৫ লাখ টাকা দেওয়ার পরও আমার নামটি দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্তের তালিকায় রাখা হয়েছে। আমি ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার মতো অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্তের তালিকায় রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, নামঞ্জুর এবং দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্তের তালিকায় নাম থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধারা আগামী ১ এপ্রিল জামুকায় আপিল করতে পারবেন।
চার সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে ছিলেন জামুকার প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ লুৎফর রহমান। সদস্য সচিব হিসেবে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান। স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক সরদার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়াবুর রহমান সরদার।
উল্লেখ্য, এ উপজেলায় ৬৮২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণ করছেন। এই ৬৮২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্য থেকে ৩৩৬ জনের যাচাই বাচাই তালিকায় নাম আসে। এই ৩৩৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ২৬৩ জনের নাম যাচাই বাচাই করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কমিটি কর্তৃক ২৬ জন নামঞ্জুর, ১১৮ জন দ্বিধাবিভক্ত ও ১১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্তের তালিকায় রাখা হয়। ৭৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে অনুপস্থিত থাকায় কমিটি তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
ডেস্ক/লালসবুজের কণ্ঠ/হাবিবা
Leave a Reply