লালসবুজের কণ্ঠ, নিউজ ডেস্ক
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা মমতাজ মীমের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায়। সন্তান হারানোর শোক সইতে পারছেন না মাইশার মা–বাবা। স্বজনেরা মানতে পারছেন না এমন মৃত্যু।
রাজধানীর খিলক্ষেতে উড়ালসড়কে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন মাইশা। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। ছুটির দিনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উত্তরার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। খিলক্ষেত উড়াল সড়ক দিয়ে ৩০০ ফুট যাওয়ার পথের ঢালে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন।
আজ শনিবার সকালে মাইশার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাইশার স্বজন ও প্রতিবেশীরা নানাভাবে মাইশার বাবা নূর মোহাম্মদ ও মা অছিমা বেগমকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিলাপ করে নূর মোহাম্মদ বারবার বলছেন, ‘তোমরা আমার মীমকে এনে দাও। মাগো তুমি আমাদের ছেড়ে কোথায় চলে গেলা। তুমি ফিরে আসো।’
মাইশা মমতাজ পরিবারের বড় মেয়ে। মাইশা তাঁর বাবার প্রতিষ্ঠিত কালিয়াকৈরের মৌচাক আইডিয়াল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গতকাল সকালে মাইশার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর শিক্ষক, সহপাঠীসহ প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন মাইশার গ্রামের বাড়িতে। বিকেলে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়ি মৌচাকে আনার পর স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মাইশার স্কুলশিক্ষক আবুল কালাম বলেন, মাইশা মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই বোনের মধ্যে মাইশা বড়। তাঁরা দুজনই পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন।
এদিকে ওই দুর্ঘটনার সময়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মাইশা উড়াল সড়কের এক পাশ দিয়ে স্কুটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে বড় একটি কাভার্ড ভ্যান ওই স্কুটির পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে কাভার্ড ভ্যানের চাকার নিচে চাপা পড়েন মাইশা।
এরপর কাভার্ড ভ্যানটি একটু সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ট্রাকের ভেতর থেকে চালক বা সহযোগী উঁকি দিয়ে সেই দৃশ্য দেখেন। এরপরই দ্রুত ট্রাকটি সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন পেয়ে পুলিশ মাইশার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।
লালসবুজের কণ্ঠ/শান্ত
Leave a Reply